লেখক: robinkantidey.com
প্রকাশিত: ১৫ মার্চ, ২০২৫
🔹 প্রথম দেখা
নীলিমা আর অরিত্র—দুজনের পরিচয় হয়েছিল এক শীতের সকালে, বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে। দুজনেই ছিল বইয়ের পোকা, দুজনের চিন্তাভাবনা, স্বপ্ন, ভালোবাসার অনুভূতি সব কিছুই ছিল একদম মিলে যাওয়ার মতো।
অরিত্র খুব স্বল্পভাষী, শান্ত স্বভাবের ছেলে। অন্যদিকে, নীলিমা ছিল প্রাণোচ্ছল, হাসিখুশি এক মেয়ে। কিন্তু এক অদ্ভুত আকর্ষণ দুজনের মধ্যে জন্ম নেয়, যেন তারা একে অপরের জন্যই তৈরি।
🔹 ভালোবাসার গভীরতা
সময় গড়াতে থাকে, আর দুজনের মধ্যে এক মধুর সম্পর্ক তৈরি হয়। সকাল-বিকেল একসঙ্গে কাটানো, বই পড়া, চা খাওয়া, রিকশায় শহর ঘোরা—সবকিছুই যেন এক স্বপ্নের মতো ছিল।
একদিন, অরিত্র নীলিমাকে বলল, “নীলি, তুমি কি জানো? আমার স্বপ্ন হলো তোমার সাথে সারাজীবন একসঙ্গে থাকা।”
নীলিমা মুচকি হেসে বলল, “আমিও তাই চাই, অরিত্র!”
কিন্তু ভাগ্য ছিল নিষ্ঠুর।
🔹 এক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা
অরিত্র একদিন রাস্তা পার হচ্ছিল, তখনই একটি বেপরোয়া ট্রাক এসে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। হাসপাতালের বিছানায় কয়েক ঘণ্টার লড়াইয়ের পর, ডাক্তার জানালেন—অরিত্র আর নেই!
নীলিমা বিশ্বাস করতে পারছিল না। কয়েক ঘণ্টা আগেও যে হাতটা ধরে সে হেঁটেছিল, যে মানুষটা তার পাশে ছিল, সে এত দ্রুত কেমন করে হারিয়ে গেল!
সে চিৎকার করে বলল, “এটা মিথ্যা! এমন হতে পারে না! তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারো না, অরিত্র!”
কিন্তু বাস্তবতা ছিল নির্মম।
🔹 অপূরণীয় অপেক্ষা
অরিত্র চলে যাওয়ার পর, নীলিমা আর কখনো আগের মতো হাসতে পারেনি। প্রতিদিন সে একই লাইব্রেরিতে গিয়ে সেই চেয়ারে বসতো, যেখানে তারা একসঙ্গে বসতো।
অরিত্রের মোবাইল নম্বর সে কখনো ডিলিট করেনি। মাঝে মাঝে ফোন বের করে দেখতো, ভাবতো যদি একদিন কল করলে ওপাশ থেকে অরিত্র বলে ওঠে, “নীলি, কেমন আছো?”
কিন্তু ওপাশটা চিরকালই নীরব ছিল।
একদিন নীলিমা অরিত্রের শেষ পাঠানো মেসেজটা পড়ছিল:
“নীলি, আমি তোমাকে কখনো হারাতে চাই না… তোমার সঙ্গে পুরো জীবন কাটাতে চাই।”
নীলিমার চোখ দিয়ে এক ফোঁটা অশ্রু পড়লো মোবাইল স্ক্রিনের ওপর।
ভালোবাসা হয়তো হারিয়ে যায় না, কিন্তু কেউ কেউ থেকে যায় অপূরণীয় অপেক্ষায়…